বর্ষায় টাঙ্গুয়ার হাওরের সৌন্দর্য বেড়ে যায় দ্বিগুণ। মেঘে ঢাকা আকাশ দেখে মনে হয় যেন স্পর্শ করা যাবে। তবে টাঙ্গুয়ার হাওর একেক মৌসুমে একেক রূপ ধারণ করে। বর্ষাকালে আশপাশের ১৭৩টা হাওর মিলেমিশে একাকার হয়ে এটা হয়ে ওঠে আরেকটা সাগর, কী ঢেউ সেখানে।
বর্ষাকালে ভিন্ন রূপ ধারণ করে টাঙ্গুয়া, হয়ে যায় সীমাহীন সাগরের মতো এক বিশাল জলাভূমি। নৌকা ভেড়ানোর জায়গাও তখন মেলে না সহজে, গ্রামগুলো হয়ে যায় একেবারে নির্জন দ্বীপের মতো। বর্ষাকাল আসলে উড়ে চলে যায় মঙ্গোলিয়া কিংবা হিমালয়ের দিকে। বর্ষাকালে হাওরের চারিদিকে পানিতে ভরপুর। আর আকাশে যেন মেঘেরা খেলা করে।
শীতকালে আনুমানিক ৩০ প্রজাতির পরিযায়ী বন্য হাঁস টাঙ্গুয়ার হাওরে অবস্থান করে। আপনি সহজেই স্থানীয় গ্রাম থেকে একটি ডিঙি নৌকা ভাড়া করে হাসের পালের কাছে যেতে পারেন, তাদের কোনোরূপ বিরক্ত না করে। শীতকালে আবার এখানে ফিরে আসে এবং আশ্রয় নেয় আগের তৈরি করা নীড়েই। আকাশে উড়ন্ত অবস্থায় এই ঈগল হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে জাদুকরী প্রাকৃতি
কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ: ঢাকার সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে যেকোনো বাস সরাসরি সুনামগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এসব নন-এসি বাসে জনপ্রতি টিকেট কাটতে ৬৫০-৭৫০ টাকা লাগে আর সুনামগঞ্জ পৌঁছাতে প্রায় ছয় ঘণ্টা সময় লাগে।
সিলেটের কুমারগাঁও বাস স্ট্যান্ড থেকে সুনামগঞ্জ যাওয়ার লোকাল ও সিটিং বাস আছে। সিটিং বাস ভাড়া ১০০ টাকা, সুনামগঞ্জ যেতে দুই ঘণ্টার মতো সময় লাগবে। অথবা শাহজালাল মাজারের সামনে থেকে সুনামগঞ্জ যাবার লাইট গাড়িতে ২০০ টাকা ভাড়ায় যাওয়া যায়।
সুনামগঞ্জ নেমে সুরমা নদীর ওপর নির্মিত বড় ব্রিজের কাছে লেগুনা/অটো/বাইক করে তাহিরপুরে সহজেই যাওয়া যায়। তাহিরপুরে নৌকা ঘাট থেকে সাইজ এবং সামর্থ্য অনুযায়ী নৌকা ভাড়া করে বেড়িয়ে আসুন টাঙ্গুয়ার হাওর থেকে। তবে শীতকালে পানি কমে যায় বলে আপনাকে লেগুনা/অটো যেতে হবে সোলেমানপুর। সেখান থেকে নৌকা ভাড়া করে নিতে পারবেন হাওড়ের উদ্দেশ্যে।
কোথায় থাকবেন
টাঙ্গুয়ার হাওরে থাকার জন্য তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে যদি নৌকায় রাত কাটাতে চান তবে নিরাপত্তার জন্যে পাড়ের কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করুন। আর ঘর ভাড়া করতে চাইলে টেকেরঘাট এলাকায় হাওর বিলাশ নামে কাঠের বাড়িতে স্বল্প মূল্যে রুম ভাড়া নিয়ে থাকতে পারবেন।
0 comments:
Post a Comment